মাহাবুবুর রহমান, কক্সবাজর :: রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সন্তান প্রসবের হিড়িক পড়েছে। গত ১৭ মাসে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রায় ৩০ হাজার শিশু জন্ম গ্রহন করেছে। একই সাথে গর্ভবতি আছে আরো ২০ হাজার নারী। কক্সবাজার শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয় সূত্রে পাওয়া এই তথ্য অবশ্য মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের কাছে একটু ভিন্ন তাদের দাবীএই সংখ্যা আরো অনেক বেশি হতে পারে। এই অবস্থা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যত পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে সেই চিন্তাই অস্থির হয়ে পড়েছে স্থানীয়রা। তাদের দাবী দ্রুত রোহিঙ্গারা বাংলাদেশ ছাড়ছে না সেটা সবাই মনে করছে কিন্তু তাদের সংখ্যা যে হারে বাড়ছে ভবিষ্যতে সেই পরিস্থিতি কিভাবে সামাল দেওয়া হবে?
কক্সবাজারে শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ের সহকারী প্রত্যাবাসন কর্মকর্তা মোঃ শাহজাহান বলেন,পার্শবর্তি দেশ মায়ানমার সেনাবাহিনি কতৃক নির্যাতনের স্বীকার হয়ে কক্সবাজারে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ৯ লাখ রোহিঙ্গা। যদিও বায়োমেট্রিক নিবন্ধন হয়েছে প্রায় ১১ লাখের বেশি তবে সেখানে বর্তমান হিসাবে আছে প্রায় ৯ লাখ। আর এই রোহিঙ্গা ক্যাম্প ভিক্তিক নভেম্বর মাস পর্যন্ত পাওয়া তথ্য মতে ১৭ মাসে এ পর্যন্ত ২৭ হাজার নবজাতক জন্ম গ্রহন করেছে। তবে বিভিন্ন স্থানে অবস্থানরত রোহিঙ্গা সহ সব মিলিয়ে নবজাতকের সংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার পার হতে পারে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ঠরা। অন্যদিকে কক্সবাজার সিভিল সার্জন অফিসের তথ্য মতে বর্তমানে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গর্ভবতির সংখ্যা ১৮ হাজার ৩৩২ জন। এ ব্যাপারে যুবনেতা ইমরুল কায়েস চৌধুরী বলেন,রোহিঙ্গা সমস্যা এখন ক্যাম্প পর্যন্ত আছে কিন্তু সেই দিন বেশি দূরে নয় যে রোহিঙ্গা সমস্যা বাড়ির উঠান পর্যন্ত চলে আসবে। সরকারি ভাবে ৩০ হাজার শিশু জন্ম গ্রহন করেছে বলা হলেও সে সংখ্যা ৫০ হাজারের বেশি হবে। এবং এটা দিন দিন বাড়ছে নতুন জন্ম গ্রহন করা শিশুরা একদিন বড় হবে তাদের জন্য প্রয়োজন হবে জমি বাড়িঘর,জ্বালানি সহ নিয়মিত খাবার আরএ সব কিছুই কর্তন হবে আমাদের কাছ থেকে। আর এই সমস্যার একমাত্র সমাধান হচ্ছে দ্রুত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন করা। আমরা চাই যেকোন মূল্যে দ্রুত রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা। উখিয়ার সুজন সভাপতি নুর মোহাম্মদ সিকদার বলেন,রোহিঙ্গারা বর্তমানে ব্যাপক হারে ক্যাম্প থেকে বের হয়ে যাচ্ছে, আমাদের আশে পাশে অনেক রোহিঙ্গা পরিবার এখন স্থায়ী ভাবে বসবাস করছে, বেশির ভাগ রোহিঙ্গাদের তাদের আত্বীয় স্বজনের পাশে বাড়ি করছে আমি নিশ্চিত তারা আর বার্মায় ফিরে যাবে না। কারন ইতি মধ্যে অনেকে মেয়ের বিয়ে দিচ্ছে আবার ছেলের জন্য বৌ নিয়ে আসছে স্থানীয়দের সাথে রোহিঙ্গাদের সম্পর্ক বেড়ে যাচ্ছে। আর বর্তমানে যদি ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা হয় আর সরকারি হিসাবে যদি ৩০ হাজার নবজাতক শিশু আর ২০ হাজার গর্ভবতি হলে আমার মতে ক্যাম্পের বাইরে পুরু কক্সবাজারে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের হিসাব করলে সেই সংখ্যা অনেক বেশি হবে। উখিয়া প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহাম্মদ বলেন,আমরা এখন নিজ শহরের বন্দি হয়ে পড়ছি সামনে আরো কঠিন সময় আসছে সেটা আমাদের জন্য নির্ধারিত। কারন ইতিমধ্যে রোহিঙ্গাদের কারনে আমাদের বনভুমি,পাহাড়,জলাধার,রাস্তাঘাট,প্রাকৃতিক পরিবেশ এছাড়া দ্রব্যমূল্যের দাম সহ নানান ভাবে আমরা যে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি সেটা কখনো পূষিয়ে উঠবে বলে মনে হয় না। আর রোহিঙ্গাদের মধ্যে বিয়ের প্রবণতাও অনেক বেশি তাদের মধ্যে অনেকের ৪/৫ জন স্ত্রীও আছে। আর তারা ঘনঘন সন্তান জন্ম দিতে অভ্যস্ত। তাহলে ১৫/২০ বছর পর পরিস্থিতি কি হবে সেটা কি কেউ ভেবে দেখেছে ? ইদানিং প্রত্যাবাসন আলোচনা অনেকটা থমকে গেছে বল্লেই চলে সে হিসাবে রোহিঙ্গারা যে আপাতত ফিরছেনা সেটা অনেকটা নিশ্চিত। তিনি বলেন একটা সময় আসবে যখন স্থানীয়দের রক্ষার জন্য আলাদা ব্যবস্থা নিতে হবে। টেকনাফ ২১ নাম্বার ক্যাম্পের চাকমারকুল মেডিকেল ক্যাম্পে কর্মরত স্বাস্থ্য কর্মী নাসরিন সুলতানা বলেন, রোহিঙ্গা নারীদের মধ্যে সন্তান জন্মদানের প্রবনতা অনেক বেশি। আমার দেখা মতে ২০ বছরের একজন রোহিঙ্গা মেয়ের ৩ টি সন্তানও আছে এবং সামনে আরো সন্তান নেওয়ার ইচ্ছা আছে। মুলত তারা মায়ানমারে কোন ধরনের সচেতনতা বা পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ে ধারনা পায় নি। বরং কিছু ধর্মীয় কথাবার্তাকে পূজি করে তারা আরো বেশি সন্তান নিতে আগ্রহী হয়ে উঠে। যার ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশে তাদের পরিবার পরিকল্পনার কথা বললেও তারা সহজে রাজি হয় না। বরং ডাক্তার নার্সদের সাথে খারাপ আচরণ করে। উখিয়ার কুতুপালং ৪ নং ব্লকে স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে কাজ করা সুমাইয়া আকতার বলেন, এমনও আছে এক ঘরে ১১ জনই শিশু, ১ জন পুরুষের ২ স্ত্রী তাদের ২ জনের মিলে ১১ জন শিশু এমন পরিবার আমি দেখেছি। আসলে শুধু নারীদের নয় জন্মহার কমাতে হলে পুরুষদের সচেতন করা দরকার। তবে শুরুর দিকের অবস্থার চেয়ে এখন পরিস্থিতি অনেক ভাল। শুরুর দিকে রোহিঙ্গা নারীদের সাথে পরিবার পরিকল্পনা নিয়ে কথাই বলা যেত না, তারা বলতো আল্লাহ রিজিক দেবে তুমি বলার কে? অবশ্য এখন অবস্থার কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। তাই অনেক রোহিঙ্গা নারী পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহন করতে রাজি হচ্ছে।
এ ব্যাপারে কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডাঃ আবদুল মতিন বলেন, এটা আমাদের জন্য দূর্যোগ। সবাইকে মিলে এই দূর্যোগ মোকাবেলা করতে হবে।
প্রকাশ:
২০১৯-০১-২৭ ০৯:৩২:১৪
আপডেট:২০১৯-০১-২৭ ০৯:৩২:১৪
- পেকুয়ায় নিখোঁজ স্কুল শিক্ষকের সন্ধান মেলেনি
- চকরিয়ায় অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদার করতে হবে -জামায়াত
- পেকুয়ায় ট্রাক চাপায় মুদি দোকানী নিহত
- খুটাখালীতে সকড় সংস্কারের পূর্বেই ইটগুলো গায়েব নীরব
- তথ্য প্রকাশের মাধ্যমে গুজব প্রতিরোধ সম্ভব” –ইউএনও চকরিয়া
- চকরিয়ায় সেনা কর্মকর্তা হত্যা: মূল হোতা নাছির উদ্দিন ও সহযোগী ডাকাত এনাম গ্রেফতার
- এডভোকেট মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান এর ২৪তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ ক্রোড়পত্র
- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদের সাথে চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠ শিক্ষকদের মতবিনিময়
- নিপীড়িত গরীব দুঃখী মেহনতি মানুষের মুক্তির জন্য জামায়াত কর্মীদের বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে হবে -আবদুল্লাহ আল ফারুক
- ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত ওয়াসিমের পরিবারের সাথে সাক্ষাতে সালাউদ্দিন আহমদ
- চকরিয়ায় সেনা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট তানজিম সরোয়ার খুনের ঘটনায় দুইটি মামলা
- ডুলহাজারায় সেনা কর্মকর্তা তানজিম হত্যার বিচার চেয়ে বিক্ষোভ
- চকরিয়ায় ডাকাতের গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হলেন তরুণ সেনা কর্মকর্তা তানজিন
- চকরিয়ার যুবলীগ নেতা কছিরের রয়েছে সম্পদের পাহাড়
- লেফটেন্যান্ট তানজিম হত্যার ৬ সন্ত্রাসীকে আটক করেন সেনাবাহিনী
- ফাইতং ইউপি চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবীতে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ ও মানববন্ধন
- চকরিয়ায় আ,লীগের প্রভাবে দখল হওয়া বাজার ফিরে পেতে চায় ব্যবসায়ীরা
- সেনা কর্মকর্তা তানজিম হত্যা ও ডাকাতি,খুন,গুমের প্রতিবাদে খুটাখালী বহলতলীবাসী
- ডুলাহাজারার সংরক্ষিত বনে ডাকাতের আস্তানা, সন্ধ্যার পর শুরু হয় লুটতরাজ
- ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত ওয়াসিমের পরিবারের সাথে সাক্ষাতে সালাউদ্দিন আহমদ
- চকরিয়ায় নারী সমাবেশ ও মতবিনিময় সভায় -জেলা তথ্য অফিসের
- চকরিয়ায় ডাকাতের গুলিতে লেফটেন্যান্ট তানজিম খুন, মায়ের আহাজারী, শোকের মাতম, জানাযা সম্পন্ন
পাঠকের মতামত: